Saturday, September 11, 2021

সুকেশ রঞ্জন বিশ্বাসঃ অন্যদের চোখে

সুকেশ রঞ্জন বিশ্বাসঃ অন্যদের চোখে

।। ১ ।।




“সে সুযোগ সুকেশ আর দিলনা …” কবি পীযূষ রাউত

 

দূর ৫০এর শুরুতে আমাদের বাড়ি ছিল শিলচর শহরের তারাপুরে। তখনই সুকেশের সংগে পরিচয়। বন্ধু বন্ধু সম্পর্ক। আমার মার্বেল খেলার সঙ্গী। সুকেশ ওরা সম্ভবত কাছাকাছি কোথাও থাকতো। শেষ দেখা হয়েছিল শিলচরে। শক্তিপদ ব্রহ্মচারীও সুকেশের বন্ধু। আমাকে দেখে সুকেশ জড়িয়ে ধরেছিল। ত্রিপুরায় থাকার কারণে যোগাযোগ খুব একটা ছিলনা। বেলাভূমির অপর্না দেবের মাধ্যমে কিছুদিন আগে তার সংগে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। সে তখন অসুস্থ। সপ্তর্ষির মায়ের সঙ্গে কথা হলো। ভাবছিলাম সুস্হ হয়ে উঠলে ফের ফোন করবো। কিন্তু সে সুযোগ সুকেশ আর দিলনা।


 " শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি তাঁকে ..."  কবি মনোতোষ চক্রবর্তী

“এমন মানুষকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম … “ শুভ্রব্রত চৌধুরি

 আমরা সত্যিই ভাগ্যবান! এমন মানুষকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম। আমরা এক যৌথ অভিভাবকত্বের শীতল ছায়ায় মুক্তভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ পেয়েছিলাম। পরবর্তী প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বোধহয় সেই সুযোগ আর কোনোদিনও পাবে না। কাল থেকে বারবার শুধু স্যারের মুখটা চোখের সামনে ভেসে ভেসে উঠছে। সেই প্রাণখোলা সরল হাসি এক অনাবিল আনন্দের আবহ তৈরি করে দিত। বহাল থাকুক সেই আনন্দের ছোঁয়া চিরদিন সবার অন্তরে।

লাল সেলাম!

প্ত্রণাম আর লাল সেলাম সমার্থক কি না - এই ব্যাপারটা আমার জানা নেই। তবে আমি স্যারকে নমস্কারের সমার্থক শব্দ হিসেবে সেলাম জানাই নি। তিনি মতাদর্শগত দিক থেকে এবং প্রাত্যহিক যাপনের মধ্য দিয়ে বামপন্থা কে সযত্নে লালন করে গেছেন। তাই তাঁকে সর্বোচ্চ সম্মান জানালাম ' লাল সেলাম ' জানিয়ে। আমার কাছে এটাই তাঁকে সর্বোচ্চ সম্মান জানানোর বাক্যবন্ধ।

 


“অনেক কথা মনে পড়ে …” সুরজিৎ পাল

 সশ্রদ্ধ প্রণাম। শুনে খুব খারাপ লাগছে, অনেক কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। তোমাদের বাড়িতে স্যারের এই দীর্ঘ দিনের ছাত্র তথা হ্রস্ব দৈর্ঘ্যের সেই গৃহ শিক্ষকতার স্মৃতি ।

 


“ সহজ এই মানুষটির স্মৃতির উদ্দেশে ” দেবাশিস ভট্টাচার্য

 “ সহজ এই মানুষটির স্মৃতির উদ্দেশে আমার প্রণাম। আসাম কলেজ শিক্ষক সংস্থার উপ সভাপতি ছিলেন একটা টার্ম। সহজ ব্যবহারের মাধুর্যে নিয়মিত এ সি টি এ হাউসে আসা অধ্যাপকদের কাছের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন। অনেকেই খোঁজখবর নিতেন। শেষের দিকে রাজনৈতিকভাবেও কিছুটা কাছাকাছি হবার অবকাশ হয়েছিল। খারাপ লাগছে। মাসিমা, সপ্তর্ষি-সোমনাথরা আশা করি সামলে উঠবেন। …”

 


“যে নিষ্ঠা আর আগ্রহ নিয়ে পড়াতেন …” প্রবীর দেব

 "বেলা এগারেটা নাগাদ আমাদের স্কুল-কলেজ জীবনের বন্ধু দেবজ্যোতি চক্রবর্তী ফোন করে বলল যে স্যার আর নেই। খুব খারাপ লাগছিল । স্নেহ করতেন। অনেকদিন উনার সঙ্গে দেখা হয় নি। দেখা হলে কথা বলতেন কুশল বিনিময় করতেন। কি করে এতগুলো দিন চলে গেলো টের পাই নি। পরিষ্কার মনে পড়ছে স্যারের ক্লাশগুলোর কথা। যদি বলি যে নিষ্ঠা আর আগ্রহ নিয়ে পড়াতেন আজকের দিনে তার খুব একটা চল নেই হয়ত ভুল বলা হবে না। শ্রদ্ধা জানাই।"

 


“ …সহকর্মী, আত্মীয়সম সুকেশ রঞ্জন বিশ্বাস”, মনোজ মোহন চক্রবর্তী

 “আমার প্রাক্তন সহকর্মী, আত্মীয়সম সুকেশরঞ্জন বিশ্বাস প্রয়াত হলেন । অনেক কথাই মনে পড়ে । কী আর করবো !  আমার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী, অগ্রজসম বন্ধু - বলতে গেলে কেউই আর নেই । শোক আর করিনে । অনিবার্য যা সে কঠিন হলেও মেনে নিতে হয় । এটিও মেনে নিলাম । এখন আমি প্রায় একা ।

সপ্তর্ষিকে ফোন করেছিলাম । স্বাভাবিক কারণেই তার ফোন বন্ধ । ঈশ্বর তাকে, তার ভাই, মা, ও পরিবারকে ভাল রাখুন !”

  


“স্যারই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি …”, জয়িতা দাস

 প্রথম যেদিন করিমগঞ্জ কলেজে জয়েন করি, সিনিয়রদের মধ্যে স্যারই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি পাশে এসে পরিচয় জানতে চেয়েছিলেন, মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছিলেন। অপরিচিত পরিবেশে এই স্নেহ যে কতটা ভরসা যুগিয়েছিল মনে, সেটা কী করে বোঝাই! কষ্ট হচ্ছে মনে। তোমাদের কষ্ট  অনুভব করতে পারি।